কিংবদন্তি মৌলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী
চট্টগ্রামের ইতিহাসে বহু খ্যাতনামা ব্যক্তি রয়েছেন, যাঁরা কেবলমাত্র বাংলাদেশের ইতিহাসেরই বরেণ্য ব্যক্তি নন, পুরো উপমহাদেশের সমাজজীবন ও রাজনীতিতে তাঁরা দ্যুতি ছড়িয়েছেন। এঁদের মধ্যে মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী অন্যতম। তিনি এই উপমহাদেশের রাজনীতি ও সমাজ পরিবর্তনের এক বিশেষ যুগসন্ধিক্ষণে জন্মেছিলেন। তাঁর বাড়ি চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার আড়ালিয়া গ্রামে, যা সে-সময়কার বঙ্গদেশের পূর্ব প্রান্তের চট্টগ্রাম জেলার ছোট্ট একটি অঞ্চল। কিন্তু তিনি এমন একটি পরিবারে জন্মেছিলেন, যা বংশপরম্পরায় উজ্জ্বল। তাঁর পিতা ও পিতামহ দুজনেই ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধেই কেবলমাত্র আরবি-ফার্সিতেই দক্ষ ছিলেন না, বাংলায়ও তাঁদের বিশেষ ব্যুৎপত্তি ছিল, যেজন্য তাঁরা দুজনেই পণ্ডিত হিসেবে খ্যাত ছিলেন। তাঁদের পূর্বসূরি ফতেহ মোহাম্মদ শাহ্ও ছিলেন বাংলার ইতিহাসে অতি প্রসিদ্ধ সুলতান নসরত শাহ্ কর্তৃক জায়গিরপ্রাপ্ত জায়গিরদার।
জনাব আকাশ ইকবাল রচিত ‘কিংবদন্তি মৌলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী’ গ্রন্থ থেকে উপরে বর্ণিত তথ্যসমূহ গৃহীত। এই গ্রন্থটি কেবলমাত্র ইসলামাবাদীর সংগ্রামী জীবনকেই তুলে ধরেনি, একই সঙ্গে গ্রন্থটি তাঁর কর্মমুখর জীবনের যে সামাজিক-রাজনৈতিক পটভূমি উন্মোচন করেছে, তা ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগ থেকে বিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগ পর্যন্ত চট্টগ্রামের এবং তার বৃহৎ প্রেক্ষাপট হিসেবে বাংলাদেশের মুসলিম সমাজের এক অসাধারণ সমাজদর্পণ। এই সমাজদর্পণে, সমাজ-গবেষণায় ওঠে এসেছে, সে-সময় এই অঞ্চলের মুসলিম-সমাজ কেবলমাত্র অর্থনৈতিক দৈন্যের কবলেই আচ্ছন্ন ছিল না, শিক্ষাক্ষেত্রেও তারা বিরাটভাবে পিছিয়েছিল।
বিশেষত, তাদের রাজনৈতিক চেতনা ও সমাজসচেতনতা গ্রামের বা অঞ্চলের বাইরে প্রসারিত ছিল না। মৌলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী মাদ্রাসা শিক্ষায় খুবই উচ্চশিক্ষিত ছিলেন। তিনি একজন ফাজিল পাশ আলিম ছিলেন। তাঁর নিজের লেখা থেকেই আমরা জানতে পারি (জনাব আকাশের তথ্যমতে), তিনি হুগলী মাদ্রাসায় আরবি-ফার্সি শিক্ষা গ্রহণের সময় দেখেছিলেন, এই শিক্ষাও কোনো গভীর শিক্ষা ছিল না। শিক্ষার্থীরা আরবি-ফার্সিতে কোনো কথা বলতেই পারত না, যদিও ১৮২৭ সাল পর্যন্ত ফার্সিই ছিল সরকারি ভাষা।
নানা তথ্যসূত্র থেকে আমরা জানি, অষ্টাদশ শতকের বাংলাদেশে ফার্সির চর্চা কেবলমাত্র মুসলমানদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বহু শিক্ষানুরাগী ও রাজকর্মে আগ্রহী হিন্দুও ফার্সির চর্চা করতেন। অ্যাডামসের শিক্ষাবিষয়ক রিপোর্ট অনুযায়ী, এইসময় ফার্সি জানা হিন্দুর সংখ্যা মুসলমানদের থেকে বেশি ছিল। রাজা রামমোহন রায়ের প্রকাশিত প্রথম পত্রিকাটি ফার্সিতেই লেখা। অনেক হিন্দু পণ্ডিত মুন্সী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। যেমন, অনেক আরবি-ফার্সি জানা মুসলমান, যাঁরা বাংলা রচনায় দক্ষ ছিলেন, তাঁরা পণ্ডিত হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, মৌলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদীর পিতা, পিতামহ দুজনেই পণ্ডিত আখ্যা অর্জন করেছিলেন।
জনাব আকাশ ইকবাল তাঁর এই গ্রন্থে চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন, মৌলানা ইসলামাবাদী আজীবন ইসলামের একজন একনিষ্ঠ সেবক এবং ইসলাম প্রচারে বিরাট ভূমিকা গ্রহণ করা সত্ত্বেও তাঁর মানসিক জগৎ ও জীবনচিন্তা ছিল অসাম্প্রদায়িক এবং অসাধারণভাবে বৈশ্বিক। তিনি তৎকালীন মুসলিম-সমাজকে ইসলামের ইতিহাস ও বিশ্ব-ইতিহাস জানানোর জন্য অনন্য ভূমিকা নিয়েছিলেন। এমনকি এ কারণে তিনি সাংবাদিকও হয়েছিলেন। বের করেছিলেন সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন। ইসলামাবাদীর ইতিহাস-চেতনা কেবলমাত্র জ্ঞানের ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ ছিল না, তিনি ভারতবর্ষকে, এই উপমহাদেশকে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্ত করার জন্য তৎকালীন প্রায় প্রতিটি রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলনে নিজেকে বিপুলভাবে সম্পৃক্ত করেছিলেন। অসহযোগ ও খিলাফত আন্দোলনে তিনি নিজেকে এত গভীরভাবে জড়িত করেছিলেন যে, তাঁকে কারাভোগও করতে হয়েছিল। তিনি মুসলিম লীগের রাজনীতির সঙ্গেও একসময় নিজেকে সম্পৃক্ত করেন। কিন্তু মুসলিম লীগের রাজনীতি তাঁকে আলোড়িত করতে ব্যর্থ হয় একারণে যে, তিনি এই রাজনীতিতে গরিব কৃষক, গরিব শ্রমিকের স্বার্থের বদলে মুসলিম জমিদার ও জোতদারদের শ্রেণিস্বার্থের প্রতিফলনই বেশি দেখেছিলেন (পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পরে বঙ্গবন্ধুও প্রায় একই চেতনার অংশীদার হয়েছিলেন)।
১৯৩০ সালে ইসলামাবাদী মুসলিম লীগ ত্যাগ করে গরিব জনগণের স্বার্থে কৃষক-প্রজা দলে যোগদান করেন। তাঁর জীবনব্যাপী সাধনা ছিল কীভাবে গরিব জনগণকে দৈন্যের বন্ধন থেকে মুক্ত করা যায়। আজকের কদম মোবারক এতিমখানা, কদম মোবারক স্কুল এই সাধনা থেকে উদ্ভূত। শৈশবোত্তীর্ণ কৈশোরে পিতৃমাতৃহীন ইসলামাবাদী অনুভব করেছিলেন, অনাথ শিশু-কিশোরদের অসহনীয় অসহায়ত্ব থেকে মুক্তি দেওয়ার পথ অনুসন্ধান করতে হবে। অনাথ শিশু-কিশোরদের প্রতি এই গভীর মমত্ববোধ ইসলামাবাদী আজীবন লালন করেছেন। তিনি প্রত্যাশা করেছিলেন, কদম মোবারক এতিমখানা একদিন বিরাট প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে। তাঁর এই প্রত্যাশা আজও পূর্ণ পরিণতি পায়নি। আশা করা যায়, ভবিষ্যতে বাংলাদেশ রাষ্ট্র তাঁর এই স্বপ্নকে পূরণ করার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করবে।
ইসলামাবাদী ছিলেন একজন রাজনীতিসচেতন পূর্ণ মানুষ। তিনি স্বপ্ন দেখেছেন, এদেশের মানুষ যেন সার্বিকভাবে ঔপনিবেশিক শোষণমুক্ত হয়। সেইজন্য তিনি মুসলিম লীগের ব্রিটিশ রাজতোষণ নীতি যেমন পছন্দ করেননি তেমনি কংগ্রেসের অহিংস অসহযোগ আন্দোলনকেও তিনি ঔপনিবেশিক শাসকদের এই উপমহাদেশ থেকে বিতাড়নের জন্য উপযুক্ত পন্থা হিসেবে গ্রহণ করতে পারেননি। স্মরণীয় ১৯৩০-৩৪ সালে চট্টগ্রাম যুববিদ্রোহ ছিল ইংরেজদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম, যা বিশ্ব-ইতিহাসে একটি অনন্য উদাহরণ এই কারণে যে, এই বিপ্লবীরা তৎকালীন ব্রিটিশরাজের ইতিহাসে তাদের অধিকৃত একটি ভূমি বা অঞ্চলকে চার দিনের জন্য উন্মুক্ত ও স্বাধীন রাখতে সক্ষম হয়েছিল। সেজন্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে সুভাষ চন্দ্র বসু যখন ব্রিটিশদের বিতাড়নের জন্য আজাদ-হিন্দ ফৌজ গঠন করলেন সুদূর জাপানে এবং একসময় যখন আজাদ-হিন্দ ফৌজ প্রায় ইম্পল পর্যন্ত পৌঁছে যায় তখন মৌলানা ইসলামাবাদী সুভাষ চন্দ্র বসুর এই উদ্যোগের প্রতি যে-গোপন সহায়তার হস্ত প্রসার করেছিলেন, তা তাঁর অতলান্ত গভীর দেশপ্রেম থেকেই সঞ্জাত। এরজন্য তিনি বিরাট মূল্যও দিয়েছেন। দিল্লি ও পাঞ্জাবের ব্রিটিশ কারাগারে তাঁর উপর অবর্ণনীয় শারীরিক অত্যাচার চালানো হয়েছিল।
ইসলামাবাদী প্রকৃত অর্থেই এক অসাধারণ মানব। ধর্মে তাঁর ছিল অটল বিশ্বাস। মানুষের প্রতিও ভালোবাসা ছিল তাঁর অন্তহীন। দেশপ্রেমেও তিনি জীবন উৎসর্গ করতে ছিলেন সদা প্রস্তুত। শিক্ষার প্রতি তাঁর অনুরাগও ছিল তুলনাহীন। তিনি এদেশের মানুষকে ‘মনুষ্যত্বে’ উজ্জ্বীবিত করতে শিক্ষাকে পাথেয় হিসেবে দেখেছিলেন।
জনাব আকাশ ইকবালের ‘কিংবদন্তি মৌলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী’ গ্রন্থে ইসলামাবাদীর অসাধারণ চারিত্রিক অবয়বকে যেভাবে তুলে ধরা হয়েছে, তা মৌলানা ইসলামাবাদী সম্পর্কে যথার্থই একটি অমূল্য গবেষণা গ্রন্থ।
আমার কামনা, এই গ্রন্থটি আমাদের তরুণ-সমাজকে মানবপ্রেম ও দেশপ্রেমে উদ্দীপিত করে বাংলাদেশকে একটি মানবিক সমাজে রূপান্তরে প্রেরণা দিক।প্রফেসর ড. অনুপম সেন
উপাচার্য
প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি
চট্টগ্রাম।
“TBC An Exclusive Suggestion Question Bank with Answer and Model Test Examination 2023 – Third Year (Paperback)” has been added to your cart. View cart
-18%

Daily Use of Math: দৈনন্দিন জীবনে সহজ সমাধান
৳ 350.00 Original price was: ৳ 350.00.৳ 280.00Current price is: ৳ 280.00.

মালায়ুর দেশে
৳ 270.00 Original price was: ৳ 270.00.৳ 220.00Current price is: ৳ 220.00.
কিংবদন্তি মৌলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী
৳ 600.00 Original price was: ৳ 600.00.৳ 490.00Current price is: ৳ 490.00.
লেখক : আকাশ ইকবাল
প্রকাশনী : অক্ষরবৃত্ত
বিষয় : ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব, মুসলিম ব্যক্তিত্ব
পৃষ্ঠা : 336, কভার : হার্ড কভার, সংস্করণ : 1st Published, 2023
আইএসবিএন : 9789849614508, ভাষা : বাংলা
Description
Reviews (0)
Be the first to review “কিংবদন্তি মৌলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী” Cancel reply
Related products
Question Bank
SEO এবং অনলাইনে জীবন বদলের গল্প
লেখক : নাসির উদ্দিন শামীম
প্রকাশনী : অদম্য প্রকাশ
বিষয় : ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং
পৃষ্ঠা : 192, কভার : হার্ড কভার, সংস্করণ : 1st Published, 2024
আইএসবিএন : 97898498356010
হাজারো কোর্স,ফেইসবুকে শত শত বিজ্ঞাপন আর বাহারি ভিডিওর মন গলানো কথাবার্তার ডোপামিনে গদ গদ হয়ে কিছু বুঝার আগেই যখন স্ক্যামড হয়ে যাই আর যখন আমাদের বাবা মার কাছ থেকে আনা টাকার অপচয় দেখি চোখের সামনে,তখন অনেকেই আমরা এখন অনলাইনে ক্যারিয়ার নিয়ে কথা বলা মানুষদের বিশ্বাস করতে চাই না। মনে হয় এই বুঝি আবার ধরা খেতে যাচ্ছি! কিন্তু সমস্যা হচ্ছে – বর্তমান যুগে এমন হাজার হাজার সমস্যার ভিড়েও আমরা ভালো কিছু করতে চাই। শত বাধা আর চোর-বাটপারদের পাশ কাটিয়ে হলেও আমাদের কিছু করা দরকার আমাদের জীবনের জন্যে,ভবিষ্যতের জন্যে বা এখন যেমন আছি,তার চেয়ে ভালো থাকার জন্যে। এই ভালো থাকতে গিয়ে আমরা যা যা দেখি বা পড়ি আসেপাশে,সবখানেই দেখি শুধু স্বপ্ন আর স্বপ্ন,হাজার হাজার ডলারের গল্প আর সারাদিন গাধার খাটুনি খেটে ঘণ্টা প্রতি ৫ ডলার আয়ের একই ধরনের কলাকৌশল। কিন্তু আসল এবং মূল যেই জিনিস – দক্ষতা,সেটা একটু কঠিন বিষয় বিধায় সবাই আমাদের কন্টেন্টে নির্লজ্জভাবে এড়িয়ে যাই। এই বইয়ে আমি আমার সত্যিকারের সব গল্প বলেছি। এই গল্পগুলোর মধ্যেই আপনি সবচেয়ে কঠিন এবং কাঠখোট্টা দক্ষতাগুলো বৃদ্ধির সহজ টোটকা পাবেন,নিজের অবস্থার উন্নতিতে কি করা উচিত,কিভাবে করা উচিত এবং কোন কোন মাধ্যমে করা উচিত – সব কিছুর বাস্তব এবং স্পষ্ট ধারনা পাবেন। আমি এমনভাবে সবকিছু বলার চেষ্টা করেছি যে – যাতে করে আপনি বইটা পড়ার পর নিজেকে অন্য একজন মানুষ হিসেবে কল্পনা করেন। এমন মানুষ – যে চিন্তাভাবনায় আগের চেয়ে অনেক বেশী আত্মবিশ্বাসী,স্বপ্ন আর পরিকল্পনায় অনেক বেশী বাস্তববাদী আর ফোকাসড,অনলাইনে নিজের জীবন পরিবর্তনে সঠিক দিকনির্দেশনা পাওয়া অন্যরকম একজন যে এসইও এর ব্যাসিকটা জানে – যেটা দিয়ে সে নিজের এবং আসেপাশের হাজারো মানুষের জীবন পরিবর্তন করে দিতে পারে!
TBC An Exclusive Suggestion Question Bank With Answer – 4th year (Paperback)
ডেটা অ্যানালাইসিস ও ভিজ্যুয়ালাইজেশনে পাইথনের ব্যবহার
লেখক : আকছাদুর রহমান
প্রকাশনী : অদম্য প্রকাশ
বিষয় : কম্পিউটার ও তথ্য-প্রযুক্তি
পৃষ্ঠা : 264, কভার : পেপার ব্যাক, সংস্করণ : 1st Published, 2024
আইএসবিএন : 9789849856511, ভাষা : বাংলা
আজকের ডিজিটাল যুগে ডেটার গুরুত্ব অপরিসীম। প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে ডেটা অ্যানালাইসিস ও ভিজ্যুয়ালাইজেশন খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে। এমনকি ডেটাসংক্রান্ত পেশার জনপ্রিয়তার জন্য ডেটা সায়েন্স বিষয়টিকে উচ্চমাধ্যমিকের পাঠ্যক্রমেও চালু করা হচ্ছে। বিভিন্ন কোম্পানিতে ক্রেতাদের পছন্দ-অপছন্দ বোঝার জন্য ডেটা সংগ্রহ করে তার বিশদ ব্যাখ্যা বুঝে ও মূল্যায়ন করেই কোম্পানিগুলো তাদের নানাবিধ প্রোডাক্ট বানায়। তাই যদি আপনি কোনো ডেটা থেকে সহজেই কোনো প্যাটার্ন বানাতে পারেন বা আপনার বিশ্লেষণী ক্ষমতা ব্যবহার করে যেকোনো সমস্যার সমাধানে পারদর্শী হন, তা হলে ডেটা অ্যানালিস্ট হিসাবে আপনিও প্রতিষ্ঠিত হতে পারেন। ডেটা অ্যানালাইসিসের গুরুত্ব আরও অনেক দিক থেকে বলা যেতে পারে : ক্রেতা ও প্রতিযোগী সংস্থার মনোভাব বোঝা : ডেটা অ্যানালিসিসের মাধ্যমে ক্রেতা ও প্রতিযোগী সংস্থার মনোভাব বোঝা সম্ভব হয় এবং তাই কোনো সংস্থার সম্ভাব্য সাফল্য বা ব্যর্থতাও অনুমান করা যায়। এছাড়াও ডেটা অ্যানালিসিসের দ্বারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোন পোস্ট বা ট্রেন্ড ভাইরাল হচ্ছে, কোন সিনেমা মানুষ পছন্দ করছে, এমনকি কোন সময়ে কোন লেখা পোস্ট করলে বেশি লোক দেখছে, তা-ও বোঝা সম্ভব হয়। অভিজ্ঞতা অর্জন করতে সাহায্য করে : ডেটা অ্যানালাইসিসের মাধ্যমে একটি ব্যবসা, প্রকল্প, বা প্রতিষ্ঠানের কাজের পারফরম্যান্স বৃদ্ধি করা যায়। এটি ব্যবসায় অভিজ্ঞতা অর্জন করতে সাহায্য করে। ভবিষ্যতের প্রজ্ঞান তৈরি করতে সাহায্য করে : ডেটা অ্যানালাইসিস দ্বারা পূর্বের তথ্য থেকে ভবিষ্যতের প্রজ্ঞান তৈরি করা যায়, যাতে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় এবং ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে ভবিষ্যতে যে ধরনের পরিবর্তন হতে পারে তা অনুমান করা যায়। গবেষণা এবং নতুন উদ্ভাবন আবিষ্কার করতে সাহায্য করে : ডেটা অ্যানালাইসিসের মাধ্যমে নতুন উদ্ভাবন আবিষ্কার করা হয় যা গবেষণা, উদ্যোগ, এবং ব্যক্তিগত বা পেশাদার কাজে সাহায্য করে। সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সাহায্য করে : ডেটা অ্যানালাইসিস প্রাপ্ত তথ্য ও জ্ঞানের আলোকে ভালো সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে। ব্যক্তিগত সফলতা বা অর্জিত অভিজ্ঞতা পর্যালোচনা করতে সাহায্য করে : ব্যক্তিগত সফলতা বা অর্জিত অভিজ্ঞতা দেখে ডেটা অ্যানালাইসিস করা হয় যাতে আমাদের জীবনেকে সঠিক এবং উপযোগী দিকে পরিচালিত করা যায়। মার্কেট রিসার্চে ব্যবহার করা হয় : পণ্য বা পরিষেবা উন্নত করতে, নতুন পণ্য বা সেবা উৎপাদন করতে, মার্কেটিং রিসার্চ করার জন্য ডেটা অ্যানালাইসিস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই কারণে, ডেটা অ্যানালাইসিস একটি ব্যবসা, গবেষণা, বা যেকোনো ধরনের সংগঠনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ। তাই সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া, সঠিক পথে চলা, এবং সার্বিক সফলতা অর্জনে সাহায্য করতে ডেটা অ্যানালাইসিস অপরিহার্য। এই বইটিতে দেখানো হয়েছে কীভাবে ডেটা অ্যানালাইসিস ও ভিজ্যুয়ালাইজেশন করতে পাইথন ব্যবহার করা হয়। বিশেষ করে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে ডেটা ভিজ্যুয়ালাইজেশনের গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগুলো দেখানো হয়েছে। বইটিতে ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট এনভায়রনমেন্ট (IDE) হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে বহুল ব্যাবহৃত এবং ডেটা অ্যানালাইসিসের জন্য বিশেষায়িত জুপিটার নোটবুক। প্রোগ্রামিং কৌশলগুলো রপ্ত করতে করতে ডেটা অ্যানালাইসিস ও ডেটা ভিজ্যুয়ালাইজেশনের দিকে এগিয়ে গেলে, আপনি বুঝতে পারবেন বইটি কীভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের চাবিকাঠি হয়ে উঠছে এবং আপনার বিশ্বস্ত সঙ্গী হয়ে যাচ্ছে। এই বইটি তাদের জন্য যারা পাইথন দিয়ে ডেটা অ্যানালাইসিস ও ভিজ্যুয়ালাইজেশন শিখতে চান এবং ডেটা অ্যানালিস্ট বা ডেটা ইঞ্জিনিয়ার হতে চান। এটির জন্য প্রাথমিক প্রোগ্রামিং জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। তাই এই বইটি পড়ার আগে আমার লেখা ‘সবার জন্য পাইথন’ বইটি পড়ে নিলে ভালো হয়।
ফ্রেশারস টু জব রেডি
লেখক : শাফী শাওন
প্রকাশনী : অদম্য প্রকাশ
বিষয় : প্রফেশনাল ও ক্যারিয়ার উন্নয়ন
পৃষ্ঠা : 160, কভার : হার্ড কভার, সংস্করণ : 1st Published, 2024
আইএসবিএন : 789849835653, ভাষা : বাংলা
আমাদের পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাই হচ্ছে পরীক্ষানির্ভর। এখানে প্রায়োগিক বিষয়গুলো অনেক কম। গ্র্যাজুয়েট হওয়া এবং জব পেয়ে যাওয়া- এই দুইটার মধ্যে একটা গ্যাপ রয়েছে। গ্যাপের জায়গাটা হলো জবের জন্য প্রিপেয়ার হওয়া। সদ্য স্নাতক হিসেবে আমাদের খুবই প্রতিযোগিতামূলক জব মার্কেটে প্রবেশ করতে হয়। অনেকেই তালগোল হারিয়ে ফেলে। আর এখানে তালগোল হারিয়ে ফেলাটাই স্বাভাবিক। যেখানে আমার ওঠা, বসা, কথা বলা, বাচনভঙ্গি, আমি কেমন শব্দ ব্যবহার করছি, কীভাবে খাচ্ছি, বিবেক, বুদ্ধি, চিন্তা প্রক্রিয়া প্রত্যেকটা বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হয়। জব প্রোভাইডার অর্থাৎ নিয়োগ কর্তারা আসলে কী চাচ্ছে, কেমন মানুষ চাচ্ছে, কী ধরনের স্কিল সেট চাচ্ছে সেটা বুঝে সে অনুযায়ী নিজেকে উপস্থাপন করে, ক্যারিয়ারের শুরুটা ভালো করতে পারাটা গুরুত্বপূর্ণ। আমি কীভাবে আমার সঙ্গে সুইটেবল এবং আমার জন্য ফিট ক্যারিয়ার পাথ ঠিক করব, সে অনুযায়ী কীভাবে আমার ক্যারিয়ার প্ল্যান করব, কীভাবে প্রিপারেশন নিব, কীভাবে জব সার্চ করব, কীভাবে সিভি বানাব, কীভাবে কভার লেটার লিখব, কীভাবে আমার নেটওয়ার্ক তৈরি করব, কীভাবে সেলফ ব্র্যান্ডিং করব, কীভাবে রিক্রুটার মাইন্ডসেট বুঝব, কীভাবে ইন্টারভিউয়ের প্রিপারেশন নেব এবং একজন ফ্রেশার হিসেবে কর্মপরিবেশে কীভাবে নিজেকে মানিয়ে নেব এবং উত্তরোত্তর নিজের উন্নতি ধরে রাখব, এ যাবতীয় বিষয় ইনশা আল্লাহ্ আমরা জানব। চ্যাপ্টার শেষে কিছু টু ডু দেওয়া থাকবে, টুডুগুলো আমরা সঙ্গে সঙ্গে করে ফেলব। কোনোটা পেন্ডিং রাখব না। জব রেডি হওয়ার দিকে প্রথম পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য তোমাকে অভিনন্দন। আমাদের পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাই হচ্ছে পরীক্ষানির্ভর। এখানে প্রায়োগিক বিষয়গুলো অনেক কম। গ্যাজুয়েট হওয়া এবং জব পেয়ে যাওয়া- এই দুইটার মধ্যে একটা গ্যাপ রয়েছে। গ্যাপের জায়গাটা হলো জবের জন্য প্রিপেয়ার হওয়া। সদ্য স্নাতক হিসেবে আমাদের খুবই প্রতিযোগিতামূলক জব মার্কেটে প্রবেশ করতে হয়। অনেকেই তালগোল হারিয়ে ফেলে। আর এখানে তালগোল হারিয়ে ফেলাটাই স্বাভাবিক। যেখানে আমার ওঠা, বসা, কথা বলা, বাচনভঙ্গি, আমি কেমন শব্দ ব্যবহার করছি, কীভাবে খাচ্ছি, বিবেক, বুদ্ধি, চিন্তা প্রক্রিয়া প্রত্যেকটা বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হয়। জব প্রোভাইডার অর্থাৎ নিয়োগ কর্তারা আসলে কী চাচ্ছে, কেমন মানুষ চাচ্ছে, কী ধরনের স্কিল সেট চাচ্ছে সেটা বুঝে সে অনুযায়ী নিজেকে উপস্থাপন করে, ক্যারিয়ারের শুরুটা ভালো করতে পারাটা গুরুত্বপূর্ণ। আমি কীভাবে আমার সঙ্গে সুইটেবল এবং আমার জন্য ফিট ক্যারিয়ার পাথ ঠিক করব, সে অনুযায়ী কীভাবে আমার ক্যারিয়ার প্ল্যান করব, কীভাবে প্রিপারেশন নিব, কীভাবে জব সার্চ করব, কীভাবে সিভি বানাব, কীভাবে কভার লেটার লিখব, কীভাবে আমার নেটওয়ার্ক তৈরি করব, কীভাবে সেলফ ব্র্যান্ডিং করব, কীভাবে রিক্রুটার মাইন্ডসেট বুঝব, কীভাবে ইন্টারভিউয়ের প্রিপারেশন নেব এবং একজন ফ্রেশার হিসেবে কর্মপরিবেশে কীভাবে নিজেকে মানিয়ে নেব এবং উত্তরোত্তর নিজের উন্নতি ধরে রাখব, এ যাবতীয় বিষয় ইনশা আল্লাহ্ আমরা জানব। চ্যাপ্টার শেষে কিছু টু ডু দেওয়া থাকবে, টুডুগুলো আমরা সঙ্গে সঙ্গে করে ফেলব। কোনোটা পেন্ডিং রাখব না। জব রেডি হওয়ার দিকে প্রথম পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য তোমাকে অভিনন্দন।
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা (বিসিএস প্রিলি সহায়ক)
সবার জন্য পাইথন
লেখক : আকছাদুর রহমান
প্রকাশনী : অদম্য প্রকাশ
বিষয় : কম্পিউটার প্রোগ্রামিং
পৃষ্ঠা : 188, কভার : হার্ড কভার, সংস্করণ : 1st Published, 2023
আইএসবিএন : 9789849760856, ভাষা : বাংলা
পাইথন একটি বহুমুখী, উচ্চ-কর্মক্ষমতা এবং সহজে শেখার প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ। যা বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এর ব্যবহার এবং শেখার সরলতা, বহুমুখীতা, কর্মক্ষমতা, ডেটা বিশ্লেষণ এবং বৈজ্ঞানিক কম্পিউটিং এর জন্য শক্তিশালী সাপোর্ট, বৃহৎ এবং সক্রিয় কমিউনিটি, অবজেক্ট-ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং পাইথনকে অনন্য মর্যাদায় নিয়ে গেছে৷ তাই হুহু করে বাড়ছে পাইথনের চাহিদা৷ যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে প্রোগ্রামিং এর জগতে নিজেকে অত্যাধুনিক রাখতে পাইথন শিখুন, নিজেকে অগ্রগামী রাখুন৷ এই বইটি মূলত পাইথন প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজর প্রাথমিক ও মৌলিক বিষয়গুলো শেখানোর জন্য তৈরি করা হয়েছে। বইটিতে মৌলিক ধারণা, সিনট্যাক্স, ভেরিয়েবল, কন্ডিশনাল স্টেটমেন্ট, লুপ, ফাংশন, লিস্ট, ডিকশনারি, ফাইল হ্যান্ডলিং, মডিউল, প্যাকেজ, ডেটা স্ট্রাকচার এন্ড অ্যালগরিদম, নাম্পাই লাইব্রেরি ও বেশ কিছু মজার প্রবলেম সলভিং ইত্যাদি বিষয় প্রাধান্য পেয়েছে। যারা নতুনভাবে প্রথম কোনো প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ শেখা শুরু করতে চাচ্ছেন বা পাইথনে প্রোগ্রামিং শেখার ইচ্ছা পোষণ করছেন তাদের জন্য বইটি আদর্শ হতে পারে। তবে আপনি যদি অন্যান্য ভাষায় প্রোগ্রাম করে থাকেন এবং সেই জ্ঞানের আলোকে পাইথন শিখতে চান তাহলে বইটি হবে আপনার উপযুক্ত গাইড।
সাইবার অপরাধনামা
লেখক : আরিফ মঈনুদ্দীন
প্রকাশনী : অদম্য প্রকাশ
বিষয় : কম্পিউটার ও তথ্য-প্রযুক্তি, কম্পিউটার হ্যাকিং
পৃষ্ঠা : 84, কভার : হার্ড কভার, সংস্করণ : 1st Edition, 2023
আইএসবিএন : 9789849760863, ভাষা : বাংলা
তথ্যপ্রযুক্তির সহজলভ্যতার কারণে আমাদের দেশে বিভিন্ন বয়স ও শ্রেণির মানুষের মধ্যে ইন্টারনেট এবং স্মার্টফোনের ব্যবহার যত বাড়ছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সাইবার অপরাধ। সাইবার অপরাধ এখন নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার না জানার কারণে দিনকে দিন এ ধরনের অপরাধ বেড়েই চলছে। সাধারণত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকসহ অন্যান্য মাধ্যমগুলোয় এই অপরাধের প্রবণতা বেশি। প্রতারকরা চারদিকে তাদের প্রতারণার ফাঁদ তৈরি করে রেখেছে। ব্যবহারকারীরা তাদের অজ্ঞতার কারণে এসব ফাঁদে পা দিচ্ছে এবং প্রতারিত হচ্ছে। এসব প্রতারণার বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়েছে সাইবার অপরাধনামা বইটিতে। আশা করি প্রতারণার এসব ধরন সম্পর্কে জানা থাকলে পরবর্তী সময়ে ইন্টারনেট ও স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা সচেতন হবে এবং নিজে ও নিজের পরিবারকে সুরক্ষিত রাখতে ভূমিকা পালন করবে।
© 2024 Thebookcenterbd All rights reserved | Developed By Deshi IT
Reviews
There are no reviews yet.