রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ল্যাবরেটরি গল্পে বাংলা সাহিত্যে আধুনিকতার অন্যতম নিদর্শন। ১৩৪৭ সালে আনন্দবাজার পত্রিকার শারদীয় সংখ্যায় প্রকাশিত এই গল্পে আধুনিক জীবনের জটিলতা ও মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণের মেলবন্ধন দেখা যায়। সমালোচকরা প্রায়ই রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যকে আধুনিক বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন বললেও ‘ল্যাবরেটরি’ গল্পটি সেই ধারণাকে ভুল প্রমাণ করে।
গল্পের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন সোহিনী, এক অসাধারণ নারীর চরিত্রায়ণ। সোহিনী একাধারে প্রখর বাস্তববাদী এবং গভীর আদর্শবাদী। লেখকের মতে, সোহিনীর চরিত্র “সাদায়-কালোয় মিশানো খাঁটি রিয়ালিজমের” উদাহরণ হলেও তার মনের গভীরে “অন্তঃসলিলার মতো আইডিয়ালিজম” প্রবাহিত। সোহিনী শুধুমাত্র একজন নারীর প্রতিনিধিত্ব করেন না; বরং তিনি একটি নতুন যুগের ভাবনার প্রতিচ্ছবি।
গল্পে সোহিনীর জীবনের টানাপোড়েন, আত্মসম্মানবোধ, এবং দায়িত্বের মধ্যে দ্বন্দ্ব খুবই সূক্ষ্মভাবে ফুটে উঠেছে। আধুনিকতার আলোকে কাহিনির বিন্যাস এবং চরিত্রগুলোর জটিল মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য প্রতিভার গভীরতাকে প্রকাশ করে।
‘ল্যাবরেটরি’ কেবল একটি গল্প নয়, এটি নারী চরিত্রের আত্মনির্মাণ ও স্বাধীনতার প্রতীক। কাহিনির প্রতিটি ধাপে সোহিনী নিজের পরিচয়কে সংজ্ঞায়িত করেছেন। আধুনিক বাংলা সাহিত্যের এই কালজয়ী গল্পটি পাঠকদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে সক্ষম।
Reviews
There are no reviews yet.