কাগজের নৌকা
কাগজের নৌকা
By (author) আশীফ এন্তাজ রবি
আমার একটি বউ এবং দুটি কন্যা আছে। গাড়ি নেই, ফ্ল্যাট নেই, মাথায় নানা ছকের গল্পের প্লট ছাড়া ঢাকা অদূরে, অগভীর জলের নিচে অন্য কোনো স্থাবর প্লট নেই।
তবে ৩৫ বছরে দুটি সন্তান, একটি বউ, একটু বেশি হয়ে গেল না? তা হয়তো গেল। আমি বিয়ে করেছি ম্যালা আগে। ইউনিভার্সিটির ফার্স্ট ইয়ারেই। সহপাঠীকে, অবশ্যই প্রেম-ভালোবাসার কেস।
সে অন্য গল্প এবং অনেক পুরোনো গল্প।
তবু সেই পুরোনো গল্পই আমাদের বয়ে বেড়াতে হয়, এটাই নিয়ম। আমি আর মিতু দুই কন্যাকে বুকে নিয়ে সেই পুরনো, মরচে পড়া, ঘুণে ধরা, শ্যাওলা পড়া, একটু বিবর্ণ হয়ে যাওয়া গল্প বয়ে বেড়াই। এর নাম সংসার।
আমাদের সংসারে কোনো জ্বালাময়ী সমস্যা নেই, আবার খুব উপচে পড়া সুখও নেই। সংসার সম্পর্কে এ রকম একটি সমস্যার কথা একদা শ্রীরামকৃষ্ণ বলেছিলেন— জলে নৌকা থাকুক, সমস্যা নেই, নৌকায় জল থাকলে সমস্যা। তুমি সংসারে থাকো ক্ষতি নেই, কিন্তু তোমার ভেতর যেন সংসার না থাকে।
আমরা কেউ শ্রীরামকৃষ্ণ নই। কাজেই সুনাগরিকের মতো আমাদের সংসারের ভেতর যেমন বাস করতে হয়, তেমনি আমাদের ভেতরেও জোরালোভাবে সংসার আছে, সংসার থাকে। মাস গেলে বাড়িভাড়া, আইপিএসের ব্যাটারি নষ্ট হলে, সেটি বদলে ফেলা, বড় মেয়েটা অঙ্কের চেয়ে ইংরেজিতে কেন কম নম্বর পেল, সেটি নিয়ে ভাবা, ছোট মেয়েটার জ্বর হলে তার মুখে থার্মোমিটার পুরে দেওয়া— কত কাজ। সংসারে না থেকে উপায় আছে!
অতএব একটা পুরনো গল্পের বাঁধা চরিত্র হয়েই তো আমাদের বেঁচে থাকতে হয়। বেঁচে থেকে আমরা সেই পুরনো এবং ছকবাঁধা গল্পের পাতায় পাতায় ঘুরি, নির্ধারিত সংলাপ আউড়ে যাই, এক সময় শেষ পৃষ্ঠায় এসে গল্পটা আচমকা শেষ হয়ে যায়। তারপর আবার, ইয়েস আবার, সেই গল্পটা প্রথম পাতা থেকে শুরু হয় এবং একই গতিপথে শেষ পাতা অবধি চলতে থাকে।
কারবালার প্রকৃত ইতিহাস: হৃদয়বিদারক এক অধ্যায়
"কারবালার প্রকৃত ইতিহাস" বইটি কারবালার ঘটনা ও তার গভীরতার নির্ভরযোগ্য বর্ণনা তুলে ধরে, যা মুসলিম জাতির জন্য এক শোকাবহ এবং শিক্ষণীয় অধ্যায়।
লেখক : মুফতি মুহাম্মাদ শফি রহ.
প্রকাশনী : সমকালীন প্রকাশন
বিষয় : ইসলামি ইতিহাস ও ঐতিহ্য
পৃষ্ঠা : 112, কভার : পেপার ব্যাক, সংস্করণ : 1st Published, 2025
ভাষা : বাংলা
কালকের আন্দোলন, আজকের আন্দোলন
কালকের আন্দোলন, আজকের আন্দোলন
By (author) অনুপম দেবাশীষ রায়
শাহবাগ আন্দোলনের আগে ও পরের আন্দোলনগুলার রূপ ও গতি কীভাবে বদলিয়েছে, কতটা সফল হয়েছে বা হয়নি থেকে শুরু করে আজকের ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, স্বতন্ত্র জোট–সবকিছুর কথা এ বইটিতে আছে।
এই বইয়ের মূল আলোচ্য–শাহবাগ, কোটা, নো ভ্যাট আর নিরাপদ সড়ক আন্দোলনগুলো চোখের সামনেই হয়েছে বলে বইটি পড়ার সময় সেই সময়গুলো একদম খুব জীবন্ত হয়ে আসে।
বিশ্লেষণে লেখক পদে পদে প্রশ্ন করেছেন প্রচলিত ন্যারেটিভকে। বায়ান্নর যে সাংস্কৃতিক বহুত্ববাদী চেতনা, তা আজ কতখানি টিকে আছে? নব্বইয়ের কাঙ্ক্ষিত গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষা আমরা এখনো লালন করছি, নাকি উন্নয়নের ঝলকানিতে তা কখন হারিয়ে গেছে আমরা খেয়াল রাখিনি? ২০১৩ সালে যে তরুণেরা জেগে উঠেছিল তারা কি এই অন্ধত্ব থেকে মুক্ত?
লেখক অতীত ও আগামীর এমন অসংখ্য প্রশ্ন নিয়ে কথা বলেছেন। তরুণ আন্দোলনের আশঙ্কার কথা বলেছেন, সম্ভাবনার কথা বলেছেন, স্বপ্নের কথা বলেছেন।
আর সেই স্বপ্নপূরণের পথও দেখিয়েছেন।
—আনিকা তাবাস্সুম,
রেজওয়ান খায়ের ফাহিম
আইন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
কিংবদন্তি মৌলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী
লেখক : আকাশ ইকবাল
প্রকাশনী : অক্ষরবৃত্ত
বিষয় : ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব, মুসলিম ব্যক্তিত্ব
পৃষ্ঠা : 336, কভার : হার্ড কভার, সংস্করণ : 1st Published, 2023
আইএসবিএন : 9789849614508, ভাষা : বাংলা
কিশোর উপন্যাস
কিশোর উপন্যাস
By (author) আল মাহমুদ
বাংলা সাহিত্যের এই কালজয়ী কথাশিল্পীর জীবনাবসান ঘটে ১৬ জানুয়ারি ১৯৩৮ সালে, কলকাতায়। তার অধিকাংশ ছড়ার মধ্যেই ফুটে উঠেছে শিশুদের প্রতি অপরিসীম ভালোবাসা। তার ছড়ায় আছে ছোটদের মনভোলানোর রূপকথার কাহিনি, আছে স্বপ্নরাজ্যের হাতছানি।
তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার, আদমজী সাহিত্য পুরস্কার, একুশে পদক, স্বাধীনতা পুরস্কারসহ দেশের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্য পুরস্কার ও পদক পেয়েছেন। ভারতের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবং রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কবিকে সম্মানসূচক ডি. লিট উপাধিতে ভূষিত করে।
২০০৬ সালের ১৭ আগস্ট, ৭৬ বছর বয়সে তিনি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।মাত্র ২০ বছরের সাহিত্যজীবনে তিনি অজস্র কবিতা, গান, গল্প, নাটক, উপন্যাস, প্রবন্ধ রচনা করেছেন। তার অগ্নিবীণা, সাম্যবাদী, দোলনচাঁপা, বিষের বাঁশি, ভাঙ্গার গান, প্রভৃতি কাব্যগ্রন্থ; ব্যথার দান, রিক্তের বেদন, শিউলি মালা গল্পগ্রন্থ; বাঁধন হারা, মৃত্যুক্ষুধা, উপন্যাস; ঝিলিমিলি, আলেয়া, নাটক; যুগবাণী, দুর্দিনের যাত্রী, রাজবন্দির জবানবন্দি প্রবন্ধগ্রন্থ; রুবাইয়াৎ-ই-ওমর খৈয়াম, দিওয়ানে হাফিজ, অনুবাদগ্রন্থ উল্লেখযোগ্য।
তার শিশুতোষ কবিতায় উঠে এসেছে শিশুমনের ভাবনা। ছন্দের জাদু দিয়ে তিনি ছোটদের মনে নানা ভাব জাগিয়ে তুলতেন এবং তাদের মনের গভীরে পৌঁছে যেতেন। খুকি ও কাঠ্বেরালি, লিচু-চোর, খাঁদু-দাদু ইত্যাদি তারই প্রমাণ।
বাংলা সাহিত্যের এই মহান কবি ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
কিশোর উপন্যাস
কিশোর উপন্যাস
By (author) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
পৃথিবীর যেকোনো বড় সাহিত্যিকদের সৃষ্টির মধ্যেই শিশু-কিশোর চরিত্র একটি বিশেষ ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়। তাদের জীবনের নিজস্ব যে ধরন, ভাবনা-চিন্তার যে পদ্ধতি, তাদের প্রতিদিনের জীবনের যে বিভিন্নতা, তার যে রং, রস, সুগন্ধ বা যন্ত্রণাকাতরতা বা নিপীড়িত হওয়ার যে মর্মান্তিকতা, একজন লেখকের পক্ষে তা এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।
কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় শিশু-কিশোরের সামাজিক সত্তাকে বা বিভিন্ন চরিত্রকে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্মভাবে পর্যবেক্ষণ করে তাদের আবেগের আলো ও অন্ধকারকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তুলে এনেছেন। এর ফলে এদের মধ্য দিয়ে আমাদের চলমান জীবনবাস্তবতা যেমন উঠে এসেছে, তেমনি সমাজকে ভারসাম্যময় করবার একটি তাগিদও সামাজিকভাবে সৃষ্টি হয়েছে। শরৎচন্দ্র এদের দিয়ে কোনো বৈপ্লবিক কাজ সম্পাদন করার চেষ্টা করেননি। কারণ, তাহলে তা সেই সময়ের বাস্তবতায়, যে সমাজকে তিনি প্রতিনিধিত্ব করছেন, তার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ হতো না। তিনি সমাজে যা বিরাজমান, তা-ই মেলে ধরেছেন।
শরৎচন্দ্রের বিপুল সাহিত্যকর্ম থেকে কিশোরদের জন্য উপযোগী চারটি উপন্যাস এ গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে— বিন্দুর ছেলে, বড়দিদি, নিষ্কৃতি আর রামের সুমতি। এসব পাঠে একজন কিশোর খোঁজ পাবে এর মধ্যে নিহিত সত্য-সুন্দর ও কল্যাণের প্রতি অন্তহীন আস্থাকে আত্মস্থ করার বিদ্যা।
কিশোর কবিতা
কিশোর কবিতা
By (author) শামসুর রাহমান
শামসুর রাহমান শিশু-কিশোর সাহিত্যে এক নতুনমাত্রা যুক্ত করেছেন। দেশপ্রেম ও মানবিক মূল্যবোধ জাগাতে কবির ছড়া-কবিতা ব্যাপক শিক্ষণীয় এবং নান্দনিক উপস্থাপনাও বটে; যা আধুনিক বাংলা শিশুসাহিত্যকে করেছে বর্ণিল এবং উপভোগ্য।
এই জনপদের মানুষ, প্রকৃতি ও সংস্কৃতির আচার-রীতি কবি শামসুর রাহমানের আরাধনা। ফুল-পাখি-পতঙ্গ, প্রাণী, গুল্মলতা, বৃক্ষ, নদী, প্রান্তর, ফসলের খেত, গান, চাঁদ, সূর্য, তারা এসবের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে চিনিয়েছেন কবি। আর এই ছন্দময় কবিতার পঙ্ক্তি দিয়ে তৈরি করেছেন সৌন্দর্যবোধ তথা জীবনবোধ। এই জীবনবোধের নাম দেশাত্মবোধ। মহান মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অহংকার। এই অহংকারের চেতনা নিয়ে কবি শামসুর রাহমান আমাদের সাহিত্যে চির অমর হয়ে থাকবেন।
কবি শামসুর রাহমানের হাত ধরে আমাদের শিশুসাহিত্য হয়েছে বর্ণিল এবং সমৃদ্ধ। তিনি স্পর্শ করতে পেরেছিলেন ছোটদের মনোজগৎ। ছোটদের জন্য যা লিখেছেন, তা-ই ছবি হয়ে উঠেছে। চিত্রশিল্পী ছবি আঁকেন রং-তুলি দিয়ে আর কবি শামসুর রাহমান ছবি আঁকেন ছড়ার ছন্দ ও শব্দ দিয়ে।
কিশোর গল্প
কিশোর গল্প
By (author) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
ছোটগল্পের কালজয়ী স্রষ্টা হিসেবে রবীন্দ্রনাথের কৃতিত্ব আমাদের বিস্মিত করে। বাংলা ছোটগল্পকে তিনি হাতে ধরে হাঁটতে শিখিয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, তিনিই প্রথম ছোটগল্পে পৃথিবীর সব মানুষের অনুভব-উপলব্ধিকে শৈল্পিক মহিমা দিয়েছেন। এই মহিমান্বিত ভূখণ্ডে কেবল বড়দের অধিকারই প্রতিষ্ঠিত হয়নি, সেখানে শিশু-কিশোরদের জন্যও রয়েছে অভাবনীয় সব শিল্পসম্পদ যা অল্পবয়সীদের পরিণত মানুষ হয়ে ওঠার অনুপ্রেরণা হিসেবে অসাধারণ। সহজ কথা সহজ করে বলা যেমন কঠিন, তেমনি ছোটদের চিত্ত ও চিন্তার উপযোগী ভাব ও বিষয়কে ধারণ করে ছোটগল্প লেখার কাজটিও সহজ নয়।
শিশু-কিশোরদের প্রাণের মানুষ হিসেবে তিনি তাদের মনের কথাকেই সহজ-সরল ভাষায় গল্পের অবয়বে উপস্থাপন করেছেন। তার কোনো কিশোর গল্পেই কাহিনি বা ঘটনার ঘনঘটা নেই। শিশুতোষ ভাব ও কল্পনার সমান্তরালে নিজেকে স্থাপন করে তিনি তাদের ভাষায়ই তাদের কথা বলেছেন। অর্থাৎ রবীন্দ্রনাথের কিশোর গল্পে আমরা যে রবীন্দ্রনাথকে পাই, গণিতের হিসাবে তার বয়স যতই হোক না কেন, ভাব, কল্পনা ও ভাষার ঘনত্বে তিনি কিশোর রবীন্দ্রনাথ।
তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ প্রবাহের এই যুগে বইয়ের সঙ্গে শিশুকিশোরদের দূরত্ব বেড়েছে এ কথা ঠিক, কিন্তু বইয়ের গুরুত্ব অনুধাবনে ব্যর্থ হলে ভবিষ্যতের বিপর্যয় এড়ানো কঠিন। রবীন্দ্রনাথের কিশোর গল্পগুলোকে এই বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে তুমুল প্রতিবাদ হিসেবে পাঠ করা যায়।
কিশোর রচনা
কিশোর রচনা
By (author) ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
তখন বাংলা অঞ্চলে আধুনিক শিক্ষা সবেমাত্র শুরু হচ্ছে। শিশুরা চেয়ার-টেবিল-বেঞ্চিওয়ালা স্কুলে যাচ্ছে পড়তে। কিন্তু পড়তে গেলেই তো আর হবে না! তাদের পড়ার জন্য তো বই লাগবে! আগে তো বই লাগত না। টোলে বা গুরুর বাড়িতে শিশু-কিশোররা পড়তে যেত। গুরু মুখে মুখে যা বলতেন তাই-ই তারা শিখত। কিন্তু আধুনিক শিক্ষার জন্য চাই বইপত্তর। কিন্তু কে লিখবে বই! এ তো আর বড়দের বই না যে চাইলে অনেকেই লিখতে পারবে!
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর লিখলেন শিশুদের জন্য একের পর এক বই। লিখলেন বর্ণপরিচয় থেকে শুরু করে কথামালা, নীতিবোধ, চরিতাবলী, জীবনচরিত ইত্যাদি মজার মজার সব বই।
বিদ্যাসাগরের ‘কিশোর রচনা’র এই সংকলনে মূলত ছোটদের মানবিক ও নৈতিক মূল্যবোধ অর্জনে সহায়ক গল্পগুলোই নেয়া হয়েছে। এসব গল্প পড়ে তারা যাতে বড় মানুষ হওয়ার পথে পা বাড়ায়; বড় পৃথিবীর পথে পা বাড়ায়।
বইতে সংকলিত গ্রন্থগুলোতে বিদ্যাসাগরের বানানরীতিই অনুসরণ করা হয়েছে। যাতে আমাদের তরুণ শিক্ষার্থীগণ তার ভাষারীতির সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পারে।
কী যে করি
কী যে করি
By (author) গোলাম রাব্বী
সহজ করে বললে, এটা একটা গল্পের বই। নিজেকে নতুন করে তৈরির এক রহস্যময় বই। বইটা আমি কেবল পড়িইনি; বইটার সঙ্গে আমি ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলাম। আছি। থাকব। আমার জীবনের গল্পটাও প্রায় এ রকমই। ‘কী যে করি’, ‘কী যে করি’; এসব ভাবনা আমার মাথায়ই আসে না। নিজে কখনো হাল ছাড়িনি। আমার ভাবনায় সব সময়ই ছিল দেশ। নিজের মাধ্যমে দেশ ও মানুষের কল্যাণ। বইটিতেও তেমনি গল্পচ্ছলে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে—নিজেকে গড়ো। নিজেকে নিজের এবং সবার জন্য ভাবো। নিজের সেরাটা দেওয়ার ও তৈরি করার কথা বলা হয়েছে। আমি কখনো কখনো না পারতেই পারি। সহজে আমার স্বপ্ন ধরা না-ও দিতে পারে। সে জন্য হতাশ হওয়া, নেতিয়ে পড়া বা হারিয়ে যাওয়ার কোনো মানে হয় না। বইটি গল্পে গল্পে বলছে—এগিয়ে যাও। নতুন কিছু করো। অন্তত ‘কী যে করি’, ‘কী যে করি’ না ভেবে, কিছু হলেও শুরু করো। কিছু না করলে নাচো। গাও। তা-ও না করতে ইচ্ছে হলে গল্প করতে করতে হাসো। মানে, কিছু না কিছু একটা করো।
ভুল হতেই পারে। কাজ করলে ভুল হয়। তা নিয়ে পড়ে থাকা যাবে না। একা না পারলে দু-একজনকে সঙ্গী বানাতে পারো। রাব্বী যেমন বইটা লিখতে গিয়ে টিম বানিয়েছে। গবেষণা করেছে।
বইটির আরও যে বিষয় আমার ভালো লেগেছে তা হলো, বইটি কেবল পড়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে না। নিজে পড়লাম, শেলফে গুছিয়ে রাখলাম বা নিজে পড়তে পড়তে মাথার পাশে রেখে ঘুমিয়ে পড়লাম—এসবের পাশাপাশি বইটিকে একটা মানবিক ও সামাজিক আন্দোলনে রূপ দিতে চাওয়া। যেখানে আমিও থাকতে চাই।
ফলে সবার ‘কী যে করি’ ফোবিয়া দূর হবে। কিছু একটা করা শুরু করে দেবে। দেশের মূল্যবান সম্পদ তরুণ-কিশোরদের এক ছাতায় আনবে। ওরা কথা বলবে—সবাই শুনবে, শিখবে এবং শেখাবে। যে যেটা ভালো পারে, তাকে দিয়ে সেটা করা হবে। কাজের অভাব হলে, স্বপ্নপূরণে সবাই মিলে প্রয়োজনে নতুন কাজ সৃষ্টি করবে। তারপরও থামা যাবে না। এককথায় বইটাকে মূল ধরে—বেকায়দায় ফেলতে চাইছে বেকারত্বকে; যা হবে আসলেই আনন্দের, সাহসের ও গর্বের। দেখা হচ্ছে সেই পরিবর্তনে। বইটির সঙ্গে; সৃষ্টির পথে।
মাশরাফি বিন মর্তুজা
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক
সংসদ সদস্য, নড়াইল-২
কীয়েক্টাবস্থা
কীয়েক্টাবস্থা
By (author) মোস্তাকুর রহমান
‘কীয়েক্টাবস্থা’ লেখকের বিচিত্র অভিজ্ঞতাপুষ্ট জীবনের গল্প। এ বইটিতে উল্লিখিত সব চরিত্র বাস্তব, সব কাহিনি নির্ভেজাল সত্য। রহস্য, রোমাঞ্চ, ভ্রমণ, প্রেম, বিরহ, কিংবা একজন নিরীহ ছাত্রের গতানুগতিক জীবন এই গল্পগুলোর বিষয়বস্তু হলেও, একটি বিশেষ ক্ষেত্রে বইটি যেন এক সূত্রে গাঁথা মালা। আর সেই সুতোটি হলো প্রাত্যহিক জীবনের নানা বিড়ম্বনা। প্রতিটি গল্পের শুরুতে আমরা দেখতে পাই কিছু নিদারুণ ঘটনা, আর শেষে গিয়ে এক চিলতে রোদ্দুরের মতো এক টুকরো হাসি। ঠিক যেমনটি আমাদের যাপিত জীবন।
কীয়েক্টাবস্থার গল্পগুলোর সূতিকাগার পৃথিবীর নানা প্রান্ত। কখনো তা বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বা বুয়েটের ছাত্রহল, কখনো তা হিমালয়ের পাদদেশ কিংবা নেপালের দুর্গম পথ, কখনো কাতারের ঊষর বিমানবন্দর, কখনো নিউ মেক্সিকো কিংবা মার্কিন মুলুকের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য।
জীবন, সে তো অনুমানের অতীত! এ কারণে ‘কীয়েক্টাবস্থা’ কোনো মিথ নয়, সত্য। যে ছেলেটি আজ সানন্দে প্রকৌশল যন্ত্র নিয়ে খুটখাট করে, যে মেয়েটি চিকিৎসক হওয়ার মানসে হাড়গোড় গোনে কিংবা যে ছেলেটি কোনো কিছুর পরোয়া না করে ভার্সিটির ক্যাফেটেরিয়ায় বসে তাস পেটায় আর সিগারেট ফোঁকে, সবাই তার নিজ নিজ জীবনের পরিক্রমায় নানা তিক্ত, বিচিত্র ও চমকপ্রদ অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে যায়। অভিজ্ঞতালব্ধ হলে কেউ তা ভুলে যায়, কেউ তা মনে রাখে। আর কেউ কেউ এই তুচ্ছ লেখকের মতো তা অহেতুক লিখে রাখে।