সৃষ্টির উল্লাসে রোবটিকস ৩
সৃষ্টির উল্লাসে রোবটিকস ৩
By (author) মিশাল ইসলাম
সৃষ্টির উল্লাসে রোবটিকস বইয়ের ৩য় খণ্ডটি বাচ্চা থেকে বুড়ো যারা রোবটিকসের বেসিক কিছু জিনিস আগেই শিখেছে তাদের আরও একধাপ বেশি শিখতে সাহায্য করবে। এই বইয়ের সাহায্যে ইএসপি৩২ ডেভেলপমেন্ট বোর্ড ও তার মাধ্যমে হাতেকলমে আইওটি শিক্ষা শুরু করতে পারবে যে কেউ। ৭ বছর বা তার ঊর্ধ্বে যে কেউ এই বই থেকে হাতেকলমে রোবটিকস নিয়ে শিখতে পারবে। এই বইয়ের মাধ্যমে ২ ডজন হাতেকলমে আইওটি ও রোবটিকসের প্রোজেক্ট বানানো শেখা যাবে। বইটি নিজে একজন মেন্টর হিসাবে যেমন কাজ করবে তেমনি বইটি পড়ে যে কেউ অন্য কাউকে রোবটিকসে মেন্টরিং করতে পারবেন। তাই বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে অভিভাবকদের সাহায্যে একসাথে এই বইয়ের প্রতিটি কাজ বুঝে বুঝে করার আহ্বান করা হচ্ছে। অবিরাম থাক সবার রোবটিকসের জগতে বিচরণ।
সৃষ্টির উল্লাসে রোবটিকস ৪
সৃষ্টির উল্লাসে রোবটিকস ৪
By (author) মিশাল ইসলাম
সৃষ্টির উল্লাসে রোবটিকস বইয়ের ৪র্থ খণ্ডটি বাচ্চা থেকে বুড়ো যারা রোবটিকসের বেসিক কিছু জিনিস আগেই শিখেছে তাদের আরও একধাপ বেশি শিখতে সাহায্য করবে। এই বইয়ে ইএসপি৩২ ডেভেলপমেন্ট বোর্ড ও তার মাধ্যমে হাতেকলমে আইওটি শিক্ষাকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, ৩য় খণ্ড যেখানে শেষ হয়েছে তার পর থেকে। পাশাপাশি এই বইয়ে ওয়ার্ল্ড রোবট অলিম্পিয়াডের বাংলাদেশ জাতীয় পর্বের প্রস্তুতিরও প্রাথমিক ধারণা দেওয়া হয়েছে। বইটি এমনভাবে লেখা হয়েছে যে ৭ বছর বা তার ঊর্ধ্বে যে কেউ এই বই থেকে হাতেকলমে রোবটিকস নিয়ে শিখতে পারবে। এই বইয়ের মাধ্যমে ১৮টি হাতেকলমে আইওটি ও রোবটিকসের প্রোজেক্ট বানানো শেখা যাবে। বইটি নিজে একজন মেন্টর হিসাবে যেমন কাজ করবে তেমনি বইটি পড়ে যে কেউ অন্য কাউকে রোবটিকসে মেন্টরিং করতে পারবেন। তাই বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে অভিভাবকদের সাহায্যে একসাথে এই বইয়ের প্রতিটি কাজ বুঝে বুঝে করার আহ্বান করা হচ্ছে। অবিরাম থাক সবার রোবটিকসের জগতে বিচরণ।
সেলসম্যানের ডায়েরি
সেলসম্যানের ডায়েরি
By (author) কাজী এম মোর্শেদ
এ বইয়ের লেখক প্রায় তিরিশ বছর বিভিন্ন পদে কাজ করেও নিজেকে বাংলাদেশের আইসিটি মার্কেটের একজন সেলসম্যান বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।
বাংলাদেশের প্রায় সকল পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে মার্কেটিং শেখালেও কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে সেলসম্যানশিপের ওপর কোনো কোর্স নেই। সেলসম্যানশিপ ছাড়া কোনো কোম্পানি চলে না। কোম্পানির প্রোডাক্ট বা সার্ভিস বিক্রির জন্য প্রয়োজন সঠিক সেলসম্যানশিপ। প্রসেস ফলো করে ক্যারিশম্যাটিক একজন সেলসম্যান ব্যবসায়ের জন্য ভালো ফলাফল নিয়ে আসতে পারেন।
কাজ করতে গিয়ে ভুল হলে তা থেকে শিক্ষা নেওয়া খুবই দরকারি। লেখকের লম্বা ক্যারিয়ারের কিছু অভিজ্ঞতা কাহিনিসহ সংযোজিত করা হয়েছে এই বইয়ে, একইসাথে তিনি কী শিখেছেন তাও লিখেছেন।
লেখকের মতে, আমরা সবাই একজন সেলসম্যান। বাসা সামলাতে, অফিস সামলাতে, ক্লায়েন্ট সামলাতে আমরা সেলসম্যানের কাজ করি, সেটা বুঝে বা না বুঝে। ভুলগুলো শুধরাই, ঠিকগুলো বেছে নিই। দিনশেষে যা সেল করলাম তার টাকা না পাওয়া পর্যন্ত সেলস শেষ হয় না, অন্যদিকে ব্যক্তিজীবনে টাকা বড় কথা না, সমস্যা সমাধান না হলে কাজ শেষ হয় না।
যারা ব্যবসায় সেলসম্যান হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হতে চায়, তাদের জন্য বইটি কোনো না কোনোভাবে কাজে লাগবে।
সোনালি কাবিন
সোনালি কাবিন
By (author) আল মাহমুদ
‘সোনালি কাবিন’-এর মতো উচ্চাভিলাষী প্রকল্প বাংলা গীতিকবিতার বিশাল ভুবনে সম্ভবত আর একটিও নেই। প্রকল্পটি প্রায় যেকোনো বিচারে মহাকাব্যিক। স্থান-কালের বিপুলতা আছে, বিপুল জনগোষ্ঠীকে আওতাভুক্ত করার প্রত্যয় আছে, এমনকি ঐতিহ্যের বিপুল পুরোনো উপাদানকে সসম্মানে প্রশ্রয় দিয়েও জনগোষ্ঠীর জন্য নতুন ধর্ম প্রস্তাবের ইশারা আছে। নায়ক-চরিত্রের কুলগৌরব নেই; কিন্তু আছে আরও বড় কিছু— নিজের কুলকেই মহিমাময় করে তোলার হিম্মত। সে সংগ্রামী। অসংখ্য প্রতিপক্ষ তার। তবে কবিতার ময়দানে হাজির হওয়ার আগেই তার লড়াইপর্ব শেষ হয়েছে। প্রবল প্রত্যয়ী একরাশ সিদ্ধান্ত নিয়ে বেশ মোলায়েম বয়ানের পসরা সাজিয়ে হাজির হয়েছে যুগপৎ দয়িতা আর পাঠকের দরবারে। বয়ানে উৎপাদন-সম্পর্ক আর ক্ষমতা-সম্পর্কের গভীর গোপন ভাঁজগুলো যথোচিত মূল্য পেয়েছে। সে এতটাই যে মার্কসীয় পরিভাষায় সম্পর্কশাস্ত্রের নিরিখে কবিতাটি পাঠ করা চলে। ঐতিহ্যের নির্বাচন, মূল্যায়ন, পুনর্গঠন ও প্রকল্পের সামগ্রিকতায় এর রাজনৈতিক সুর জাতীয়তাবাদী; অন্যদিকে আবার গণতান্ত্রিক-সমাজতান্ত্রিক মূল্যবোধের টুকরা-টাকরা অনিবার্য উপাদান হয়ে মিশে গেছে কবিতাটির শরীরে এবং আত্মায়।
স্কিলস টু গ্রো ইন করপোরেট
স্কিলস টু গ্রো ইন করপোরেট
By (author) জি এম কামরুল হাসান
প্রত্যেক ব্যক্তিরই কোনো না কোনো বিষয়ে প্রতিভা ও দক্ষতা আছে। কিন্তু একে সময়মতো পরিচালনা করা গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও বর্তমান পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে জ্ঞানকে আপগ্রেড করাও জরুরি। শুধুমাত্র কাজ সম্পর্কে জ্ঞানই যথেষ্ট নয়। প্রত্যেক ব্যক্তিরই তার দক্ষতাকে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর উপায় জানা বা যেকোনো পরিস্থিতির সাথে নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারার ক্ষমতা থাকা উচিত। কীভাবে নিজের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানো যায় এবং, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, কীভাবে নিজের উন্নতি ঘটানো যায় সে সম্পর্কে ধারণা থাকা।
এই বইয়ে ক্যারিয়ারে উন্নতির গুরুত্ব তুলে ধরার পাশাপাশি একটি সফল কর্মজীবন-যাত্রার সাফল্যের পেছনের গাইডলাইন ও সাফল্যের পথগুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
স্কুল মানে আড্ডাখানা
স্কুল মানে আড্ডাখানা
By (author) অনুপম দেবাশীষ রায়
শিক্ষাব্যবস্থা কেমন হওয়া উচিত? যে শিক্ষার ভেতর দিয়ে আমরা এতগুলো বছর পার করি সেটি কি তার লক্ষ্য অর্জন করতে পারে? এই শিক্ষাব্যবস্থার ভেতরে থেকেও কেমন করে ভালো ছাত্র হওয়া যায়? কেমন করে ভালো গবেষক হওয়া যায়? একটা মাধ্যমিক গবেষণাপত্র কেমন করে লিখতে হয়? কেমন দেখতে হয় একটা গবেষণাপত্র? এ প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজে এ বইটি। এ বইটি এমন একধরনের শিক্ষাব্যবস্থার কথা কল্পনা করে, যেখানে স্কুল হবে আনন্দময়। শিক্ষা তার প্রকৃত অর্থ খুঁজে পাবে আর স্কুল হয়ে উঠবে একটি বন্ধুবৎসল আড্ডাখানার মতো। সেই আড্ডার মধ্য থেকেই উঠে আসবে জ্ঞান-বিজ্ঞান ও গবেষণা। এমন একটি ভবিষ্যতের আশায় বইটি পাঠকের হাতে তুলে দেয়া হলো।
স্টেম কোষের আদ্যোপান্ত
স্টেম কোষের আদ্যোপান্ত
By (author) অপূর্ব পাল
জীববিজ্ঞানের গবেষণায় স্টেম কোষ এখন আর নতুন কিছু নয়। বিদ্যমান নানা সমস্যায় স্টেম কোষ এক প্রতিশ্রুতিশীল সমাধানের নাম। যারা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে জীববিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় পড়াশোনা করছেন, তারা এ নিয়ে গভীরভাবে জানার সুযোগ পেয়ে থাকেন। কিন্তু কেমন হত যদি আমাদের দেশের শিশু-কিশোররা মৌলিক বিজ্ঞানের নানা বিষয় নিয়ে শৈশব থেকেই জানতে পারত?
বিজ্ঞান কখনোই পরীক্ষাগার কিংবা কোনো বিশেষ শ্রেণির জন্য সীমাবদ্ধ রয়ে যেতে আসেনি। বৃহত্তর মানবকল্যাণে একে কাজে লাগানো না গেলে ষোল আনাই বৃথা। স্টেম কোষ বইটি হতে পারে এই প্রচেষ্টায় এক অনন্য সংযোজন। মাতৃভাষা বাংলায় বিজ্ঞানকে সহজতম করে তোলার এক অনবদ্য প্রয়াসের সন্ধান মেলে স্টেম কোষ বইটির প্রতিটি অধ্যায়ে। স্টেম কোষের ইতিহাস, স্টেম কোষকে ঘিরে নানাবিধ গবেষণা, বিজ্ঞানীদের সাফল্য-ব্যর্থতা, মানবদেহে স্টেম কোষের আচরণ ইত্যাদি নিয়ে বইটিতে লেখক আলোচনা করেছেন।
জীববিজ্ঞানের কিছু মৌলিক বিষয় সম্পর্কে ন্যূনতম জ্ঞান থাকলেই একজন বইটি পড়ে উপকৃত হতে পারেন। লেখক যথেষ্ট পরিমাণ মৌলিক গবেষণা পড়ে বইটি লেখার চেষ্টা করেছেন— এটি বইটির পরতে পরতে সুস্পষ্টভাবে বোধগম্য। একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিক হলো, বইটি যদি কেউ অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির মধ্যে পড়ে ফেলতে পারেন তাহলে ভবিষ্যতে জীববিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করতে গেলে তিনি নিঃসন্দেহে এর সুফল ভোগ করবেন।
স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট
স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট
By (author) তানভীর শাহরিয়ার রিমন
চাপে নেই এমন মানুষ আসলে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। বিভিন্ন কর্পোরেট হাউসের বিক্রয়কর্মীদের নানারকম স্ট্রেস সামলাতে হয়, স্ট্রেস সামলাতে হয় বিভাগীয় প্রধান থেকে একজন সিইওকে। উদ্যোক্তাদের চাপের কোনো শেষ নেই। আবার যারা নতুন ক্যারিয়ার তৈরি করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, কিন্তু ব্যাটে-বলে হচ্ছে না, তাদের চাপও কম নয়। ব্যক্তিজীবনে সম্পর্কের টানাপোড়েন থেকেও অনেকে চাপে ভোগেন। এই বইয়ে আমরা নেগেটিভ চাপ কী করে দূর করব এবং পজিটিভ চাপের মাধ্যমে কী করে অনুপ্রাণিত হব সেই সব হ্যাকস নিয়ে কথা বলা হয়েছে। বলা হয়েছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় ব্যবস্থাপনার কৌশল নিয়ে। আর হ্যাঁ, লাইফস্টাইল, হেলদি লাইফস্টাইল, সেল্ফ কেয়ার কী করে আমাদের জীবনের নেগেটিভ চাপকে পজিটিভ চাপে রূপ দেবে সেইসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে সমধিক গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। যারা চাপ সামলে জীবনে সামনে এগুতে চান, যারা নিজেদের জীবনকে সুশৃঙ্খল নিয়মে পরিচালিত করতে চান, হতে চান সফল উদ্যোক্তা, কর্পোরেট লিডার— বইটি তাদের জন্য। টিনএজার থেকে শুরু করে তাদের অভিভাবকরাও উপকৃত হবেন এই বই থেকে, দায়িত্ব নিয়ে বলছি।
স্পোর্টিংলি নাও
স্পোর্টিংলি নাও
By (author) প্রভাষ আমিন
জীবন শুধু যাপনের নয়, উদযাপনেরও
এই বইটি হওয়ার কথা ছিল না, অন্তত আমার পরিকল্পনায় ছিল না। প্রকাশক যখন আমাকে ফোন করে পাণ্ডুলিপি চাইলেন, স্বভাববিরুদ্ধভাবে আমি মুখের ওপর না করে দিয়েছি। না করার কারণ, আমার কাছে কোনো পাণ্ডুলিপি নেই। আর আগে থেকেই পরিকল্পনা করা বই গোছাতে এত ব্যস্ত ছিলাম যে নতুন করে ভাবার সুযোগই ছিল না। অপরিচিত প্রকাশককে না করলেও আমি একটু বিস্মিত হয়েছি, আমার মতো অচল লেখকের কাছে পাণ্ডুলিপি চায়, এমন বোকা প্রকাশকও বাংলাদেশে আছেন! মুখে না বললেও মনের ভেতরে নিশ্চয়ই ‘হ্যাঁ’ ছিল। তাই অন্য পাণ্ডুলিপি গোছাতে গোছাতে মনে মনে ভাবছিলাম। পাণ্ডুলিপি গোছাতে গিয়ে দেখি হিমশিম অবস্থা। সারা বছর এত আজেবাজে লেখা লিখেছি, এখন কোনটা রেখে কোনটা ফেলি অবস্থা। বাছতে বাছতেই দেখি খেলাধুলা নিয়ে বেশ কিছু লেখা হয়ে গেছে। এগুলো আলাদা করলে কেমন হয়, এমন ভাবতেই ভাবতেই বাংলাট্রিবিউনের শেরিফের ফোন। এবার আর না করা গেল না। এই হলো এই বইয়ের ইতিহাস। পাণ্ডুলিপি গোছাতে পড়তে গিয়ে দেখি ছেলেবেলা থেকে খেলাধুলার প্রতি যে গভীর মমতা, তার একটা প্রকাশ হয়ে যাবে এ বইয়ে।
খেলাধুলাটা কেন গুরুত্বপূর্ণ? মানুষের শরীর ও মনের সুস্থতার জন্য খেলা দরকার, এটা তো আমরা সবাই জানি, কিন্তু মানি না। আমাদের অভিভাবকরা খেলাধুলাকে মনে করেন সময় নষ্ট। বাংলাদেশের অনেক তারকা ক্রিকেটার ছেলেবেলায় খেলার জন্য বাবা-মায়ের অনেক মার খেয়েছেন। অনেকের ব্যাট কেটে ফেলা হয়েছে। আবার সাকিব আল হাসান এক লাখ ডলারে পাকিস্তানে খেলতে যাচ্ছেন, এটা শুনে আমার এক সহকর্মী বললেন, তার ছেলেকে লেখাপড়া না করিয়ে শুধু ক্রিকেট খেলাবেন। শুনে আমার ভালো লাগেনি। কারণ তার আগ্রহে ক্রিকেটের প্রতি বা খেলাধুলার প্রতি ভালোবাসা ছিল না, ছিল ডলারের প্রতি লোভ। আমি বিশ্বাস করি না, সারা দিন ব্যাট-বল নিয়ে পড়ে থাকলেই কাউকে ডলার কামানো সাকিব আল হাসান বানানো সম্ভব। সাকিব আল হাসানরা জন্মায় প্রতিভা নিয়ে তাদের বানানো যায় না। পরে প্রতিভার পরিপূর্ণ বিকাশে, অভিভাবক বা কোচ ভূমিকা রাখেন। কিন্তু প্রতিভা নেই, ভালোবাসা নেই; খালি প্র্যাকটিস করেই ভালো ক্রিকেটার বনে গেছেন, এমন ইতিহাস নেই। প্রতিভার কথাই যখন এল, তখন শচীন টেন্ডুলকার আর বিনোদ কাম্বলির গল্পটা বলে নিই। ১৯৮৮ সালে হ্যারিস শিল্ডে সারদাশ্রম বিদ্যামন্দিরের হয়ে শচীন আর বিনোদ জুটি করেছিলেন ৬৬৪ রান। যেকোনো জুটিতে সেই বিশ্বরেকর্ড এখনো অক্ষুণ্ন আছে। তখন ওই দুই প্রতিভাবান স্কুলবালককে নিয়ে অনেক হইচই হয়েছে। বলাবলি হচ্ছিল, এই দুজনের মধ্যে বিনোদ কাম্বলি বেশি প্রতিভাবান ছিলেন। সেই প্রতিভার ছিটেফোটা ক্রিকেটবিশ্ব দেখেছে বটে, তবে বিনোদ কাম্বলির খ্যাতি ক্রিকেটের কারণে নয়, কুখ্যাতি প্রতিভার অপচয়ের উদাহরণ হিসেবে। আর শচীন খেলাটির প্রতি ভালোবাসা, একাগ্রতা, নিয়মানুবর্তিতা দিয়ে নিজেকে পরিণত করেছেন একটি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে। আমি বারবার শচীনকে দেখি আর শিখি, সবাইকে শিখতে বলি। গোটা ক্যারিয়ারে প্রচারের আলোয় থাকলেও কোনো বিতর্ক নেই। যত বড়, তত বিনয়ী; এই আপ্তবাক্য সত্য মনে হয় শচীনকে দেখলে। ক্রীড়া তারকারা তরুণদের আইডল হন, তবে সবাই নয়। শচীন যেমন সত্যিকারের আইডল, কিন্তু ম্যারাডোনা নন। ক্রীড়া তারকাদের কাছে মানুষ পরিচ্ছন্ন ইমেজ চায়, চায় তার মতো হতে। কিন্তু ম্যারাডোনা যত বড় তারকাই হন, যত ভালো ফুটবলই খেলুন; কোনো অভিভাবকই চাইবেন না তার সন্তান ম্যারাডোনার মতো হোক। এই যেমন বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় তারকা সাকিব। কিন্তু তিনি আইডল নন, আইডল হবেন মাশরাফি। আশরাফুলও আইডল হবেন না।
সন্তানের হাত থেকে ব্যাট কেড়ে নেওয়াও যেমন ঠিক নয়। আবার টাকা কামানোর মেশিন বানাতে সব ছেড়ে সারা দিন ক্রিকেটে ফেলে রাখাটাও ঠিক নয়। বাংলাদেশে ক্রিকেটে গ্ল্যামার, অর্থের ঝনঝনানি দেখে অভিভাবকরা সন্তানদের সাকিব-মাশরাফি বানাতে ব্যাকুল হয়ে যান। কিন্তু সবাই সাকিব-মাশরাফি হবেন না। সবাই ক্রিকেটারাও হবেন না। শুধু যে সাকিব বা মাশরাফি হওয়ার জন্যই খেলতে হবে, তা নয়। খেলাটা হতে হবে আনন্দের জন্য, চিত্তের তৃপ্তির জন্য, সুস্থ থাকার জন্য। বিষয়টা হলো, যার কাছে যেটা ভালো লাগে। কারও ভালো লাগবে কুস্তি, কারও কাবাডি, কারও ফুটবল, কারও বা ক্রিকেট। আনন্দটাই যেন মুখ্য হয়, অর্থটা নয়। কিন্তু ইদানিং সারা বিশ্বেই পাল্টে গেছে চক্র। খেলা মানেই টাকা; আবেগ পরে, আগে টাকা। এই যেমন এখন পাকিস্তানের আচরণ নিয়ে বাংলাদেশ প্রতিবাদে উত্তাল। দাবি উঠেছে পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার। কিন্তু টাকার লোভে সাকিবরা ঠিকই খেলতে যাচ্ছেন পাকিস্তান ক্রিকেট লিগে। আগে খেলোয়াড়দের সঙ্গে ক্লাবের নাম মিলেমিশে যেত। কাজী সালাউদ্দিন মানেই আবাহনী, সালাম মুর্শেদী মানেই মোহামেডান। কিন্তু এখন কথা দেওয়ার পরও বাড়তি টাকা পেলে ক্লাব বদলে ফেলার ঘটনা অহরহই ঘটে। পেশাদারিত্বের দোহাই দিয়ে সবাই আবেগটাকে দূরে রাখেন। অথচ আমার কাছে খেলাধুলায় আবেগটাই মুখ্য। আমি একটু পুরোনো ঘরানার— ফুটবলে জয়ের চেয়ে শৈল্পিক সৌন্দর্য বেশি চাই, ধুমধারাক্কা টি-২০’র চেয়ে অলস টেস্টই মন কাড়ে বেশি। খেলা আমার কাছে নিছক খেলা নয়, জীবনাচরণ। খেলাধুলা থেকে আমি জীবনের শিক্ষা নিই। সব সময় হয়তো পারি না, কিন্তু আমি সবকিছু স্পোর্টিংলি নেওয়ার চেষ্টা করি। সবকিছুতে সিরিয়াস হয়ে বেঁচে থাকার আনন্দটা মাটি করতে চাই না। কিন্তু ইদানিং অন্য সব ক্ষেত্রে তো বটেই, স্পোর্টসেই স্পোর্টিং স্পিরিটের বড় ঘাটতি। তবু আমি জানি খেলাধুলাতেই সব আনন্দ। আমরা যদি লোভের গরলটুকু ছেকে ফেলে স্পোর্টসের আনন্দটুকু নিতে পারি, বেঁচে থাকার মানেই বদলে যেতে পারে। তাই বইয়ের নাম ‘স্পোর্টিংলি নাও’। জীবন একটাই, জীবন অমূল্য। জীবন শুধু যাপন করার জন্য নয়, উদযাপনেরও। আর এই উদযাপনের রসদ আমি পাই খেলাধূলা থেকে।
বইয়ের পাণ্ডুলিপি গোছাতে গিয়ে একটা তৃপ্তি পেলাম। গত বিশ্বকাপের পর থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট যে স্বপ্নের সময় পার করছে, তার একটা ধারাবিবরণীর মত আছে এতে। মাশরাফির নেতৃত্বে বদলে যাওয়া বাংলাদেশের পাশে কলম হাতে আমিও ছিলাম ভেবে ভালো লাগছে। আজ গোটা বাংলাদেশ মাশরাফি-জাদুতে বুঁদ। ভালো লাগছে, মাশরাফিতে আমি বুঁদ আরও অনেক আগে থেকেই।
যত দিন ক্রীড়া সাংবাদিকতা করেছি, মনের আনন্দেই করেছি। তখনই শুনেছি, এখনো শুনি, অনেকেই নাকি ক্রীড়া সাংবাদিকতা করতে আসেনই বিদেশে পাড়ি জমাতে। বিভিন্ন ক্রীড়া ইভেন্ট কাভার করতে গিয়ে ফিরে না আসা ক্রীড়া সাংবাদিকদের তালিকা কম লম্বা নয়। আমি যখন ক্রীড়া সাংবাদিকতা ছেড়ে দিই, তখনো আমাকে আটকানোর জন্য লোভ দেখানো হয়েছে, আরে মিয়া, থাকো। স্পোর্টসে থাকলে দেশ-বিদেশে ঘুরতে পারবা। সুযোগমতো ইউরোপ-আমেরিকা গিয়ে সেটেল করতে পারবা। এই জিনিসটা আমি জানি। আর কখনোই বিদেশে গিয়ে সেটেল করার কোনো ইচ্ছা আমার ছিল না, এখনো নেই। তাই সেই লোভের ফাঁদে পা দিইনি। তবে সবাই এমন নন, অল্প কয়েকজন এমন পূর্বপরিকল্পনা নিয়ে ক্রীড়া সাংবাদিকতায় আসেন। যারা এখন ক্রীড়া সাংবাদিকতা করছেন, তাদের সবার প্রতি আমার গভীর শ্রদ্ধা। আমি ছেড়ে এসেছি বটে, তবে তা ক্রীড়া সাংবাদিকতাকে খাটো করতে নয়। প্রতিদিন তারকাদের সঙ্গে ওঠাবসার যে সুযোগ, তা এখনো টানে। আমি শুধু আমার কাজের ক্ষেত্রটা বড় করতে চেয়েছিলাম। তবে ক্রীড়া এবং ক্রীড়া সাংবাদিকতার জন্য আমার অগাধ ভালোবাসা ছিল, আছে, আশা করি থাকবে।
মোস্তফা মামুনের লেখার ভক্ত আমি। শুধু খেলাধুলাবিষয়ক লেখা নয়, তার গদ্যের হাত অসাধারণ, গল্প বলার ঢং অননুকরণীয়। কালের কণ্ঠের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করার পরও এমন চমৎকার সব লেখা লেখেন কীভাবে? বইমেলার আগে নিশ্চয়ই তার ঘাড়ে প্রকাশকদের তাগাদার বিশাল বোঝা। ভয়ে ভয়ে সেই বিশাল বোঝায় চাপিয়ে দিলাম এইটুকু শাকের আঁটি। এত অল্প সময়ের নোটিশে এমন চমৎকার একটি ভূমিকা শুধু মামুনের পক্ষেই লেখা সম্ভব। ভূমিকা পড়ে আনন্দের চেয়ে লজ্জা পেয়েছি বেশি। এই বইয়ের সবচেয়ে ভালো লেখা মোস্তফা মামুনের এই ভূমিকাটুকুই। দুয়েকজন বোকা পাঠক যদি বইটি কেনেন তো মামুনের লেখার জন্যই কিনবেন।
সাবেক ক্যাবিনেট সচিব মুজিবুল হকের একটি থিওরি আমি সবসময় মেনে চলি। তিনি বলেছিলেন, সময়মত কোনো কাজ করাতে চাইলে, আপনার পাশের সবচেয়ে ব্যস্ত লোকটিকে কাজটি দিন। সেই থিওরি মেনেই মামুনকে ভূমিকা লিখতে বলেছিলাম। থিওরি আবারও ঠিক হলো, পান্ডুলিপির আগেই ভূমিকা হাজির।
প্রান্ত ঘোষ দস্তিদারের করা প্রচ্ছদটি বইয়ের নামের সঙ্গে কিছুটা বেমানান হয়তো। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেটের বদলে যাওয়ার প্রতীকি ছবি এটি। খুলনা টেস্টে পাকিস্তানের ওয়াহাব রিয়াজের চোখে চোখ রেখে গলার রগ ফুলিয়ে সাকিবের জবাব দিতে পারাটাই এখন বাংলাদেশ। আমরা আর কাউকে ডরাই না।
প্রসূন আমার সব দোষ পায়নি। খেলাধুলার প্রতি ভালোবাসাটা পেয়েছে। এই বইটা নিশ্চয়ই বাবার ছেলে আনন্দ নিয়ে পড়বে। আমি চাই প্রসূনরা পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধূলাটাও ভালোবাসুক। তাদের ছেলেবেলাটা হোক সুমনের গারেন মত ‘একটু পড়া, অনেক খেলা, গল্প শোনার সন্ধ্যে বেলা।’
স্বাধীনতা গণতন্ত্র মানবাধিকার
স্বাধীনতা গণতন্ত্র মানবাধিকার
২০০৮-২০২৩ সময়কালে বাংলাদেশের নাগরিকেরা যে শাসনপদ্ধতির মধ্য দিয়ে দিনাতিপাত করেছেন, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সংগ্রামের যে চিত্র আমাদের সামনে আঁকা আছে, সেটি অন্ধকারের। এখানে ক্ষমতাসীন দলের বাইরে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক সংগ্রাম প্রতিনিয়ত কঠোর ও নির্মম বাধার মুখে পড়েছে। একাত্তরে মুক্তিসংগ্রামের মধ্য দিয়ে যে দেশটি স্বাধীনতা অর্জন করেছিল, সে দেশটি এই সময়ে এসে অনিয়মে বারবার পিষ্ট হতে হতে অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে যে দেশটির আত্মমর্যাদায় বিশ্বদরবারে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল, তার বিপরীতে সেটি এখন প্রাতিষ্ঠানিক পঙ্গুত্বের ছোবলে ‘কর্তৃত্বপরায়ণ’ শাসক— পরিচালিত রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। এখানে নাগরিককে শাসনের জন্য সংবিধানের মুখোমুখি দাঁড় করানো হলেও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা প্রশ্নে চরম মূল্য দিতে হচ্ছে। বিচার বিভাগ থেকে শুরু করে অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে শাসকের অভিপ্রায় পূরণ করাই শেষ কথা।
এই গ্রন্থে জায়গা পাওয়া লেখাগুলো মূলত বিভিন্ন সময়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত নানারকম অনিয়ম ও অন্ধকারের খবরের মধ্যে নাগরিকের গণতান্ত্রিক সংগ্রামের দিকে ফিরে তাকানোর চেষ্টা।
স্মৃতি এবং সমাধি
স্মৃতি এবং সমাধি
By (author) অনুপম দেবাশীষ রায়
মেয়েদের জীবনের পরিচিত অসহায়ত্বের বর্ণনায় মানুষের জীবনের অর্থহীনতাকে খুবই হালকা চালে তুলে ধরার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে ‘স্মৃতি এবং সমাধি’ গল্পের বইটি। এরপর একে একে খুনির গল্প, বন্ধুর গল্প, প্রবাসে হতভম্ব জীবনের গল্প, পতিতালয়ে ধুন্ধুমার কাণ্ডের গল্প— নানামুখী বিচরণ গল্পকারের।
অনুপম দেবাশীষ রায়ের গল্প পড়ার আনন্দ তার বলার ভঙ্গির অরিজিনালিটিতে। এসব গল্পই আমরা যাপন করি, চারপাশে যাপিত হতে দেখি। এসব গল্পের সাথে পরিচয় না থাকলেও, চরিত্রগুলো চিনে নিতে আমাদের অসুবিধা হয় না।
ধূলায় ধূসর মাটির পৃথিবীতে মহাপুরুষ হওয়ার চেষ্টায় রত কিছু তরুণকে দেখা যায় একটি গল্পে, আবার অন্য একটি গল্পে নদীর ওপাড়ে পতিতাপল্লির বিপদজনক ও অমানুষিক কিছু বর্ণনাও পাওয়া যায়। বিপরীতমুখী এসব গল্প আমাদের সমাজবাস্তবতা নিয়ে ভাবিয়ে তুলবে নিঃসন্দেহে।
গল্প বলতে গিয়ে অনুপমের তাড়াহুড়ো নেই, আবার শ্লথতাও নেই; তাই পড়ার টানেই পড়ে যাওয়া যাবে এই গল্পগুলো। ‘স্মৃতি এবং সমাধি’ পাঠককে নতুন করে চিরায়ত আরও কিছু নতুন গল্প বলে যাবে।